নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : ১১ এপ্রিল শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের ভগবানপুর গাইনপাড়ার মৃত সাবজাদ মন্ডলের ছেলে মো. কামাল উদ্দিন ৫ নং মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এজাবুল হক বুলিকে দায়িত্ব পালনে বাঁধা প্রদান ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার, স্থানীয় সরকার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
অভিযোগ পত্রে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য, দফাদার ও গ্রাম পুলিশের ২৩ জন স্বাক্ষ প্রদান করেন। অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, কামাল উদ্দিন বিভিন্ন অপকর্ম করার রঙ্গমঞ্চ যা মহারাজপুর মেলার মোড়ে অবস্থিত হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল করে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করে সেখানে মাদক ব্যবসা ও নারী ব্যবসাসহ নিজস্ব বিচারালয় স্থাপন করে অবৈধ বিচার করে।
সেখান থেকেই অধ্যক্ষ আলহাজ্ব এজাবুল হক বুলিকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে বলে যে, করোনা ভাইরাসের অজুহাতে হাটবাজার বন্ধ করিস, দোকানপাট বন্ধ করিস, চায়ের দোকানে লোকজন বসতে দিসনা, তোর চৌকিদার মেম্বারসহ তোকে যেখানে পাব খুন করব। আরো জানা যায়, চেয়ারম্যান বুলি এসবের প্রতিবাদ করলে, কামাল আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এমতা অবস্থায় এজাবুল হক বুলি পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানান।
পরে পুলিশ সুপার ফোনে সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ অপারেশনকে বিষয়টি দেখতে বলেন। অপারেশন ওসি পরে চেয়ারম্যান বুলিকে আইনানুগ ভাবে গ্রাম পুলিশ ও ওয়ার্ড সদস্যদের নিয়ে কামালের অবৈধ রঙ্গমঞ্চে যাবার জন্য বলেন। পরে সেখানে সবাইমিলে গেলে কামালকে মাতাল অবস্থায় পাওয়া যায়। অভিযোগ পত্র থেকে আরো জানা যায়, মাতাল অবস্থায় কামালকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসা হয়। এ সময় কামাল সকলের সামনে স্বীকার করে যে, আমি মদ খেয়েছি এবং আমি মাতাল ছিলাম। এ অবস্থার কথা তাৎক্ষণিক বুলি চেয়ারম্যান ওসি অপারেশনকে জানানো হয়।
ওসি করোনা ভাইরাসের জন্য থানায় কামালকে না নিয়ে এসে স্থানীয় জিম্মাদারের নিকট হস্তান্তর করতে বলেন। কামালের ভাই জামাল উদ্দিন, ছেলে শফিকুল ইসলাম ও ভুটু মন্ডলকে জিম্মার দায়িত্ব দেয়া হয়। অভিযোগ পত্র থেকে আরো জানা যায়, জিম্মায় ছাড়া পাবার পর কামাল উদ্দিন আরো উত্তেজিত হয়ে পড়ে। আরো মদ পান করে মাতাল হয়ে এলাকায় হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে যে, বুলি চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রাম পুলিশদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। রাতে বাড়ির বাইরে বের হলে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিব। কামাল আরো বলে বেড়াচ্ছে, চেয়ারম্যান বুলি, গ্রাম পুলিশ ও ওয়ার্ড সদস্যদের যেখানে পাবে খুন করবে।
বর্তমান করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত প্রশাসনের প্রদত্ত নির্দেশনা ও দায়িত্ব পালন করতে গেলে কামাল উদ্দিন ও তার বাহিনী দিয়ে প্রশাসনিক কাজে বাঁধা প্রদান করছে। কামাল বাহিনীর ভয়ে গ্রাম পুলিশ, ওয়ার্ড সদস্যসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন মোড়, দোকানপাট, হাটবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় জনসমাগম করতে নিষেধ করতে যেতে পারছে না। ফলে সরকারি দায়িত্ব পালন করার জন্য চরম অসুবিধা হচ্ছে।
সরকারি দায়িত্ব পালন করতে না পারলে দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে মর্মে বাধ্য হয়ে অভিযোগ দাখিল করেন আলহাজ্ব অধ্যক্ষ এজাবুল হক বুলি। কামালসহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সরকারি নির্দেশনা পালন করতে পারছে না মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জোর অনুরোধ জানিয়েছেন চেয়ারম্যান এজাবুল হক বুলি।
Leave a Reply